রুশ সামরিক স্থাপনা ছাড়া টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার হবে না : জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে টমাহক দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পেলে সেগুলো কেবল রাশিয়ার সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হবে। ওয়াশিংটনের এই অস্ত্র সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে ক্রেমলিন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
রোববার (১২ অক্টােবর) যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এ মন্তব্য করেন। একই দিন তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন। খবর আল জাজিরার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি লেখেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার সর্বশেষ আলোচনাটি ছিল “খুবই ফলপ্রসূ”। আলোচনায় ইউক্রেনের “আকাশ প্রতিরক্ষা, স্থিতিশীলতা এবং দূরপাল্লার সক্ষমতা” জোরদারের বিষয়ে কথা হয়।
ট্রাম্পও সোমবার (১৩ অক্টােবর) বলেন, তিনি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জানতে চান, ইউক্রেন সেগুলো কিসে ব্যবহার করবে। তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে তার “একপ্রকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে”।
প্রায় দুই হাজার ৫০০ কিলোমিটার (১৫৫০ মাইল) পাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে গভীর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সুযোগ দেবে।
রোববার ইসরায়েলগামী বিমানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “ইউক্রেন টমাহাক চায়, এটি একধরনের উন্নত অস্ত্র। রাশিয়ার এটি প্রয়োজন নেই। আমি হয়তো পুতিনকে বলব, যদি যুদ্ধ বন্ধ না হয়, তাহলে ইউক্রেনকে আমরা টমাহক দিতে পারি।”
রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই বিষয়টি রাশিয়ার জন্য “চরম উদ্বেগজনক”। তিনি জানান, কিছু সংস্করণের টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
অন্যদিকে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রোববার ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোয় রুশ হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “যেভাবে গাজার যুদ্ধবিরতি মধ্যপ্রাচ্যে আশার আলো দেখিয়েছে, ইউক্রেনের যুদ্ধেরও অবসান ঘটানো দরকার।”

জেলেনস্কি ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি ম্যাক্রোঁর কাছে ইউক্রেনকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র ও বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ রাশিয়া নতুন করে আক্রমণ বাড়াচ্ছে।
জেলেনস্কির ভাষ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে রাশিয়া ইউক্রেনে তিন হাজার ১০০ ড্রোন, ৯২টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় এক হাজার ৩৬০টি গ্লাইড বোমা নিক্ষেপ করেছে।
কিয়েভ অঞ্চলে ইউক্রেনের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি ডিটিইকে-এর দুই কর্মী রোববার রাতে হামলায় আহত হয়েছেন। শুক্রবার ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিদেনকো জানান, এটি ছিল ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোর ওপর “সবচেয়ে বড় ও কেন্দ্রীভূত হামলাগুলোর একটি”, যার ফলে দেশজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।