পাকিস্তানে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৫

পাকিস্তানের কট্টরপন্থি ইসলামি দল তেহরিক-ই-লাব্বায়েক পাকিস্তানের (টিএলপি) আয়োজন করা একটি ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে সোমবার (১৩ অক্টোবর) পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। খবর এএফপির।
গত বৃহস্পতিবার টিএলপি তাদের এই প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করেছিল লাহোর থেকে এবং তাদের পরিকল্পনা ছিল রাজধানী ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাসে যাওয়ার। তবে পুলিশ তাদের এই সমাবেশ বাতিল করতে সমঝোতার চেষ্টা করলেও আলোচনা ব্যর্থ হয়। এরফলে পুলিশ লাহোর ও ইসলামবাদের মধ্যকার রাস্তাগুলো বন্ধ করে দেয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট সেবাও।
গতকাল রোববার সরকার ও টিএলপির মধ্যে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ লাহোরের উত্তরে মুরিদকে শহরে জড়ো হওয়া প্রায় সাত হাজার টিএলপি সমর্থককে ছত্রভঙ্গ করে দিতে অভিযান চালায়। সমর্থকরা এখানে ইসলামাবাদের উদ্দেশে যাত্রার অংশ হিসেবে অবস্থান নিয়েছিল।
পাকিস্তানের পুলিশ জানায়, টিএলপির কর্মীরা পাথর ছুড়ে, কাঁটাতার লাগোনো লাঠি ও পেট্রোল বোমা ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বলেও অভিযোগ করে পুলিশ।
পুলিশ পরে এক বিবৃতিতে জানায়, এই সংঘাতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। তারা আরও জানায়, বেশ কয়েকজন দাঙ্গাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৪৮ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও আটজন বেসামরিক নাগরিক।
টিএলপির উদ্দেশ্য ছিল মার্কিন উদ্যোগে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানানো। তবে পরে তারা জানায়, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে এই সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল।

তবে পুলিশের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার অভিযানের পর মুরিদকে শহরের প্রধান রাস্তায় পুড়ে যাওয়া যানবাহন পড়ে থাকতে দেখা যায়, যার মধ্যে টিএলপি নেতাদের বহনকারী ট্রাকটিও ছিল।
আল্লামা ইরফান নামে টিএলপির একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন, ‘আসলে কোনো আলোচনাই হয়নি। সরকার দেশের মানুষকে দেখানোর জন্য এই সমঝোতার উদ্যাগ ও আলোচনার কথা বলছে।’
রাজধানী ইসলামাবাদে প্রধান সড়কগুলোতে শিপিং কন্টেইনারগুলোকে ফেলে রাখতে দেখা গেছে। প্রতিবাদী বিক্ষোভকারীরা শহরে প্রবেশ করতে পারে মনে করে এগুলো রাখা হয়।
সহিংসতার এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটলো যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ গাজা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মিশরে অবস্থান করছেন।