মুক্তি দিলেও ১৫৪ ফিলিস্তিনিকে অন্য দেশে পাঠাচ্ছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তির ফলে মুক্তি পাওয়া অনেক ফিলিস্তিনি বন্দির পরিবার খুশির মধ্যেও বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছেন। কারণ ইসরায়েল তাদের প্রিয়জনদের মুক্তি দিলেও নিজ দেশে (ফিলিস্তিনে) থাকতে দেবে না, বরং অন্য কোনো দেশে জোর করে নির্বাসিত করবে। খবর আলজাজিরার।
ফিলিস্তিনি বন্দিদের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, হামাসের সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে সোমবার (১৩ অক্টোবর) মুক্তিপ্রাপ্ত কমপক্ষে ১৫৪ জন বন্দিকে ইসরায়েল এভাবে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য করবে।
এই নির্বাসনের কারণে মানবাধিকার কর্মীরা ক্ষুব্ধ। তাদের মতে, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের এভাবে জোর করে অন্য দেশে পাঠানো পুরোপুরি অবৈধ ও অমানবিক।
দোহা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক তামের কারমাউত আলজাজিরাকে বলেন, বন্দিরা ছোট কারাগার থেকে বেরিয়ে এখন তাদের সমাজ থেকে দূরে একটি বড় কারাগারে যাচ্ছে, যেখানে তারা মারাত্মক বাধার মুখে পড়বে।
এর আগে মুক্তি পাওয়া কিছু বন্দিকে তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া ও তুরস্কের মতো দেশে পাঠানো হয়েছিল। তবে এবার মুক্তিপ্রাপ্তদের কোথায় পাঠানো হবে, তা এখনও জানা যায়নি।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লার বাসিন্দা মুহাম্মদ ইমরানের পরিবারও এই নির্বাসনের খবরে হতবাক। মুহাম্মদের আত্মীয়রা আশা করেছিলেন যে, তিনি বাড়ি ফিরবেন, কিন্তু জানতে পারলেন তাঁকে নির্বাসিত করা হবে। যদিও পরিবারের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মুহাম্মদ মুক্তি পেয়েছেন, কিন্তু নির্বাসনের কারণে তারা হয়তো আর কখনোই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।
অধ্যাপক কারমাউত মনে করেন, এভাবে নির্বাসন দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, হামাস যাতে বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক সুবিধা বা ‘বিজয়’ দাবি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা। এটি মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার একটি কৌশল।
অধ্যাপক কারমাউত বলেন, এটি এক ধরনের ‘দ্বৈত মানদণ্ড’— কারণ ইসরায়েলি জিম্মিরা মুক্তি পেয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে পারছেন, কিন্তু ফিলিস্তিনিরা মুক্তি পেয়েও তাদের বাড়ি ফিরতে পারছে না।