গাজায় বিতর্কিত জিএইচএফের মিশন শেষ করার ঘোষণা
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথভাবে সমর্থিত মানবিক সহায়তা সংস্থা জিএইচএফ গাজায় তাদের ‘মিশন’ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে। সংস্থাটি চলতি বছরের মে মাসে গাজায় খাদ্য বিতরণ শুরু করলে তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও নিন্দার সৃষ্টি হয়।
জিএইচএফ–এর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা জাতিসংঘ ও গাজার বিদ্যমান মানবিক সহায়তা কাঠামোকে এড়িয়ে সরাসরি খাদ্য বিতরণ করছিল। তাদের বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিতই ভিড় ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে ইসরায়েলি সেনা ও সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে ফিলিস্তিনিদের হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর আল জাজিরার।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জন অ্যাক্রি আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেন, জিএইচএফ–এর লক্ষ্য ছিল জরুরি চাহিদা পূরণ করা, একটি নতুন পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রমাণ করা এবং পরবর্তীতে সেটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে হস্তান্তর করা।
জন অ্যাক্রি জানান, ইসরায়েল–হামাসের মধ্যে অক্টোবর থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির কিছু শর্ত—যেমন যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত সিভিল-মিলিটারি কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের গঠন ও জাতিসংঘের অংশিক সহায়তা পুনরায় চালুর অনুমতি—মিশন শেষ করার সিদ্ধান্তে ভূমিকা রেখেছে।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, জিএইচএফ গাজার জনগণকে নিরাপদে ও নিয়মিতভাবে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহকারী একমাত্র সংস্থা ছিল।
জিএইচএফ–এর এই দাবি আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত।
গত আগস্টে জাতিসংঘের ২৮ জন বিশেষজ্ঞ জিএইচএফ–কে ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন,
এটি ‘মানবিক সহায়তাকে গোপন সামরিক ও ভূরাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের ভয়াবহ উদাহরণ’, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে।
জাতিসংঘ সবসময়ই বলে আসছিল যে, গাজায় স্বতন্ত্র মানবিক কর্মীদের অবাধ প্রবেশই সংকট মোকাবিলার সর্বোত্তম উপায়।
জিএইচএফ স্বীকার করেছে যে তারা গাজায় মাত্র চারটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র খুলেছিল—তিনটি দক্ষিণ গাজায় এবং একটি গাজা সিটির কাছে। তবুও তারা নিজেদের কার্যক্রমকে ভবিষ্যতের মানবিক সহায়তার ‘মডেল’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মানবিক প্রয়োজন দেখা দিলে তারা আবার কার্যক্রম শুরু করতে পারে এবং তারা একটি নিবন্ধিত এনজিও হিসেবেই থাকছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক