ভেনেজুয়েলায় সব বিদেশি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বন্ধ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা ‘সম্পূর্ণভাবে বন্ধ’ ঘোষণা করার পর দেশটিতে চলাচল করা শেষ আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোও ফ্লাইট স্থগিত করেছে। ফলে ভেনেজুয়েলায় কোনো বিদেশি এয়ারলাইন্সই আর উড়োজাহাজ পরিচালনা করছে না।
পানামার কোপা এয়ারলাইন্স ও তাদের কলম্বিয়ান বাজেট সহযোগী উইঙ্গো বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে জানিয়েছে, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর থেকে কারাকাস রুট স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) কলম্বিয়ার রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স সাতেনা ভেনেজুয়েলার তৃতীয় বৃহত্তম শহর ভ্যালেন্সিয়া রুট স্থগিত করে। বলিভিয়ার জাতীয় এয়ারলাইন বলিভিয়ানা ডি অ্যাভিয়াসিওন তাদের কারাকাস ফ্লাইটও বাতিল করেছে। খবর আল জাজিরার।
কোপা ও উইঙ্গো জানিয়েছে, কারাকাসগামী ফ্লাইটে নেভিগেশন সিগনালে অনিয়ম ধরা পড়ায় সতর্কতামূলকভাবে তারা ফ্লাইট স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিষ্ঠান দুটি নিশ্চিত করেছে—এতে কোনোভাবেই ফ্লাইটের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি।
এই স্থগিতাদেশের পর বিদেশি এয়ারলাইন্স কেউই ভেনেজুয়েলায় ফ্লাইট পরিচালনা করছে না। তবে ভেনেজুয়েলার কয়েকটি জাতীয় এয়ারলাইন্স এখনও সীমিত আন্তর্জাতিক রুট চালু রেখেছে।
এই সিদ্ধান্ত আসে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) ৯০ দিনের সতর্কতা জারির পর, যেখানে ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় উড়োজাহাজের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলা হয়েছিল। দক্ষিণ ক্যারিবিয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকাণ্ড ও অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গত শনিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একতরফাভাবে ঘোষণা করেন—ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা ‘সম্পূর্ণভাবে বন্ধ’। এফএএ–এর সতর্কতার পরও কোপা, উইঙ্গো, সাতেনা ও বলিভিয়ানা—এই চারটি এয়ারলাইন্সই রুট চালু রেখেছিল। কিন্তু সর্বশেষ তারাও ফ্লাইট বাতিল করে।
এর ফলে ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে বিদেশে থাকা ভেনেজুয়েলান প্রবাসীদের ভ্রমণ পরিকল্পনা—বিশেষ করে যারা বড়দিনকে সামনে রেখে দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন। অনেকে ইতোমধ্যে দেশে গিয়েও আটকে পড়েছেন, কারণ ফেরার কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নেই।
ভেনেজুয়েলান প্রবাসী সংগঠন ভেনেজুয়েলানস ইন বারানকুইলায়–এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হুয়ান কার্লোস ভিলোরিয়া দোরিয়া বলেন, এতো অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ খুবই উদ্বিগ্ন। বড়দিনে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা করার আশা অনেকেরই ভেস্তে যাচ্ছে।
ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় অনেক ভেনেজুয়েলানকে এখন বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থলপথে যাত্রার পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। ভিলোরিয়া পরামর্শ দিয়েছেন, পরিবার, বন্ধু ও প্রবাসী নেটওয়ার্কের সঙ্গে সমন্বয় করে যাত্রা পরিকল্পনা করতে এবং সরকারি উৎস থেকে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করতে।
শুধু কলম্বিয়াতেই ভেনেজুয়েলার ২৮ লাখের বেশি নাগরিক বসবাস করেন—যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভেনেজুয়েলান প্রবাসী জনগোষ্ঠী। ওয়াশিংটন ও কারাকাসের টানাপোড়েন বাড়ায় তাদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক