আফগান বাধা ডিঙিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ বাংলাদেশের
বাংলাদেশের ম্যাচ মানেই দর্শক ধরে নিয়েছে, বুকের ধুকপুকানি বাড়বে। ব্যক্তিক্রম ঘটেনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে হেসেখেলে জয়ের দিকে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। তখনই আসে বিপর্যয়। সাত রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে ম্যাচ কঠিন করে তোলে বাংলাদেশ। হারতে অবশ্য হয়নি। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পাঁচ বল হাতে রেখে বাংলাদেশ পেয়েছে দুই উইকেটের জয়।
টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তান ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৭ রান করে। জবাবে ১৯.১ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫০ রান করে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতল বাংলাদেশ।
আগের ম্যাচে ওপেনিং জুটি দারুণ করলেও এদিন ব্যর্থ হন তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন। দলীয় তিন রানেই সাজঘরের পথ ধরেন তামিম। ৭ বলে ২ রান করে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে রশিদ খানের ক্যাচে পরিণত হন। ইমনও ফেরেন ২ রানে, তাকে লেগবিফোর করেন ওমরজাই।
১৪ বলে ১৮ রান করে মুজিব উর রহমানের শিকার হন সাইফ হাসান। ২৪ রানে ৩ উইকেট হারালে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক জাকের আলী অনিক। রশিদের বলে লেগবিফোর হওয়ার আগে ২৫ বলে সমান দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩২ রান করেন জাকের।
রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে উইকেট একপ্রকার বিলিয়ে দেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। নুর আহমেদের শিকার হওয়া শামীম ২২ বলে তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৩ রান করেন। শেষের দিকে ৬ বলের ব্যবধানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদ ও সাইফউদ্দিনের পর রিশাদ হোসেনও ফিরে গেলে চেপে ধরে হারের শঙ্কা।
নুরুল হাসান সোহান ও শরিফুল ইসলাম মিলে দূর করেন অনিশ্চয়তা। দুজনের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাঁচ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে বাংলাদেশ। ২১ বলে একটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন সোহান। শরিফুলের ব্যাট থেকে আসে ৬ বলে ১১ রানের সময়োপযোগী ইনিংস।
আফগানদের পক্ষে ওমারজাই নেন চার উইকেট। রশিদ পান দুটি।
ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো করেন দুই ওপেনার সেদিকউল্লাহ অতল ও ইব্রাহিম জাদরান। ৭.৫ ওভারে আসে ৫৫ রান। ১৯ বলে ২৩ রান করা অতলকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন রিশাদ হোসেন। আরেক ওপেনার জাদরানের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে ৩৮ রান। তিনি শিকার হন নাসুম আহমেদের।
জাদরানের পরপর বিদায় নেন ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল। এক রান করে রিশাদের শিকার হন তিনি। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে যায় আফগানরা। বাংলাদেশ নেয় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। উইকেট থাকলেও শরিফুল ইসলাম-নাসুম আহমেদদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আফগানরা বেশিদূর যেতে পারেনি।
শরিফুলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২২ বলে ৩০ রান করেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। শেষ দিকে মোহাম্মদ নবীর ১২ বলে অপরাজিত ২০ এবং আজমতদউল্লাহ ওমরজাইয়ের ১৭ বলে ১৯ রানে আফগানরা পায় মাঝারি পুঁজি।
বাংলাদেশের পক্ষে নাসুম ও রিশাদ দুটি করে এবং শরিফুল পান এক উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান : ২০ ওভারে ১৪৭/৫ (অতল ২৩, জাদরান ৩৮, গুরবাজ ৩০, তারাখিল ১, রাসুলি ১৪, ওমরজাই ১৯*, নবী ২০*; শরিফুল ৪-০-১৩-১, নাসুম ৪-০-২৫-২, সাইফউদ্দিন ৪-০-২২-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৪০-০, রিশাদ ৪-০-৪৫-২)
বাংলাদেশ : ১৯.১ ওভারে ১৫০/৮ (তামিম ২, ইমন ২, সাইফ ১৮, জাকের ৩২, শামীম ৩৩, সোহান ৩১*, নাসুম ১০, সাইফউদ্দিন ৪, রিশাদ ২, শরিফুল ১১*; মুজিব ৪-০-১৮-১, ওমরজাই ৩.১-০-২৩-৪, রশিদ ৪-০-২৯-২, নুর ৪-০-৪০-১, নবী ৩-০-৩২-০, আহমদজাই ১-০-৮-০)
ফল : বাংলাদেশ ২ উইকেটে জয়ী।

স্পোর্টস ডেস্ক