আফগানদের বিপক্ষে হার দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

ফরম্যাট বদলাতেই বদলে গেলো বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ধরন। আবারো ভর করল পুরোনো ভূত—ব্যাটিং ব্যর্থতা। বাংলাদেশ মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ব্যাটিং ইনিংসেই। এরপর স্বল্প সেই পুঁজি যেভাবে বল করা প্রয়োজন ছিল, বোলাররাও সেটি করতে পারেনি। ফলাফল হিসেবে হার দিয়েই ওয়ানডে সিরিজ শুরু করতে হলো বাংলাদেশকে। প্রথম ওয়ানডেতে হেরেছে ৫ উইকেটের ব্যবধানে।
আজ বুধবার (৮ অক্টোবর) প্রথম ওয়ানডেতে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ২২১ রানের পুঁজি দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৪৭.১ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান। এ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান।
রান তাড়ায় নেমে দুর্দান্ত শুরু করে আফগানরা। ওপেনিং জুটিতে ৫০ রান তুলে ফেলেন দুই ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ২৫ বলে ২৩ রান করা জাদরানকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন স্পিনার তানভীর ইসলাম। দ্রুতই তিনে নামা সেদিকুল্লাহ অটলকে (১৫ বলে ৫) ফিরিয়ে দেন তানজিম হাসান সাকিব।
তৃতীয় উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়ে কার্যত বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন গুরবাজ আর রহমত শাহ। ৩১ ও ৩২ ওভারে দুই উইকেট তুলে নিলেও আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। আউট আগে দুজনই তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। রহমত ফেরেন ৭০ বলে ৫০ রান করে আর গুরবাজ ৭৫ বলে ৫০ রান।
এরপর আফগান অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদী আর আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের দায়িত্বশীল ইনিংসে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। ৪৪ বলে ৪০ রান করে ওমরজাই ফিরলেও হাসমতুল্লাহ মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়েই। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৪৬ বলে ৩৩ রানে। তাকে সঙ্গ দিতে নামা মোহাম্মদ নবী অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ১১ রানে।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ১৮ রানেই হারায় প্রথম উইকেট। ১০ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্তও পারলেন না দায়িত্ব নিতে। ফিরলেন ৫ বলে মোটে ২ রান করে।
এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ভালোই এগোচ্ছিলেন আরেক ওপেনার অভিষিক্ত সাইফ হাসান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩৮ রান তুলে ফিরে যান সাইফ। ফেরার আগে ৩৭ বলে ২৬ রান করেন তিনি।
সাইফ ফিরলে ৫৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। পাঁচ নম্বরে নেমে হৃদয়কে সাথে নিয়ে সেই চাপ সামাল দেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০১ রান যোগ করেন এই দুজন। এতে বড় রানের পথে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ।
৩৫ ওভারে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে হৃদয় ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। ফেরার আগে ৮৫ বলে ৫৬ রান করেন তিনি। এরপর মিরাজও বেশি সময় টিকতে পারেননি উইকেটে। হৃদয় ফেরার তিন ওভার পর তিনিও বিদায় নেন। ফেরার আগে ৮৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন মিরাজ।
এরপর দায়িত্ব নিতে পারেনি বাকিরাও। জাকের আলী ফেরেন ১৬ বলে ১০ রান করে। সোহানের ব্যাট থেকে আসে ৭ রান। শেষদিকে তানজিম হাসান সাকিবের ২৩ বলে ১৭ রান আর তানভীর ইসলামের ৮ বলে ১১ রানের ইনিংসে দুইশ পার করে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৪৮.৫ ওভারে ২২১/১০ (সাইফ ২৬, তামিম ১০, শান্ত ২, হৃদয় ৫৬, মিরাজ ৬০, জাকের ১০, সোহান ৭, সাকিব ১৭, হাসান ৫, তানভীর ১১, তাসকিন ৪* ; বশির ৪-০-২৫-০, ওমরজাই ৯-০-৩৫-৩, গজনফার ৯.৫-১-৫৫-২, খারোটি ১০-১-৩২-১, রশিদ ১০-০-৩৮-৩, নবী ৬-০-২৭-০)।
আফগানিস্তান : (গুরবাজ ৫০, জাদরান ২৩, সেদিকুল্লাহ ৫, রহমত ৫০, ; তাসকিন ৮-০-৫০-০, হাসান ৮-০-৪০-০, তানভীর ১০-০-৪২-১, সাকিব ৭-১-৩১-৩, মিরাজ ১০-১-৩২-১, সাইফ ৩.১-০-২৪-০, শান্ত ১-০-৩-০)।
ফলাফল : আফগানিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী।