অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন মার্কিন তিন অর্থনীতিবিদ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিন অর্থনীতিবিদ এ বছর অর্থনীতিতে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁরা হলেন বেনএস বারন্যাঙ্কে, ডগলাস ডব্লিউ ডায়মন্ড ও ফিলিপ এইচ ডিবভিগ। সংকটকালীন অর্থনীতিতে ব্যাংকখাতের গুরুত্ব এবং ব্যাংকের পতন ঠেকানো কেন জরুরি তা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ গবেষণার জন্য অর্থনীতিতে তাঁরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
আজ সোমবার (১০ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সুইডেনের স্টকহোমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। এর মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে এবারের সব বিভাগে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইট ও ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলা হয়, বিজয়ীদের গবেষণায় অর্থনীতিতে ব্যাংকের ভূমিকা স্পষ্ট হয়েছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সংকটের সময়। তাছাড়া তাঁদের গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধান হলো, কেন ব্যাংকের পতন এড়ানো জরুরি।
বেনএস বারন্যাঙ্কে ২০০৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ডগলাস ডব্লিউ ডায়মন্ড ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর বুথ স্কুল অব বিজনেসের ফাইন্যান্সের অধ্যাপক। আর ফিলিপ এইচ ডিবভিগ সেইন্ট লুইসের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ওলিন বিজনেস স্কুলের ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক।
নোবেল কমিটি জানায়, ‘এই তিন অর্থনীতিবিদের গবেষণা সমাজ কীভাবে আর্থিক সংকট মোকাবিলা করে তা বুঝতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে তারা সংকটের সময় অর্থনীতিতে ব্যাংকগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়ার উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটিয়েছেন৷ তাদের গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ব্যাংক ধস ঠেকানো কেন জরুরি, সেটা তারা দেখিয়েছেন।’
এই তিন অর্থনীতিবিদ তাদের দেওয়া তত্ত্বে দেখিয়েছেন, ‘ব্যাংকগুলো কীভাবে এ সমস্যার সর্বোত্তম সমাধান দেয়। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তারা অনেক সঞ্চয়কারীর কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করে, আমানতকারীরা যখন ইচ্ছা তাদের অর্থ তুলতে পারেন, পাশাপাশি ঋণগ্রহীতারা দীর্ঘমেয়াদে ঋণ পান।’
চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু হয় গত ৩ অক্টোবর। প্রথম দিন চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেলজয়ী সুইডিশ বিজ্ঞানী এসভান্তে পেবোর নাম ঘোষণা করা হয়। পরদিন ঘোষণা করা হয় পদার্থবিজ্ঞানের নোবেলজয়ীর নাম। এ বিষয়ে এবার পুরস্কার পান ফ্রান্সের অ্যালাঁ আসপে, যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ ক্লাউসার ও অস্ট্রিয়ার আন্টন সেইলিংগার। এর পরদিন রসায়নে নোবেল পুরস্কারবিজয়ী তিন বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করা হয়। ‘ক্লিক কেমিস্ট্রি’ ও ‘বায়োঅর্থোগোনাল কেমিস্ট্রি’র ভিত্তি দিয়ে এই পুরস্কার জয় করেছেন আমেরিকার ক্যারোলাইন আর বারটোজ্জি, কে ব্যারি শার্পলেস এবং ডেনমার্কের মর্টেন মেলডাল। পরদিন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়ী ফ্রান্সের লেখক আনি আরনোঁর নাম ঘোষণা করা হয়। ৭ অক্টোবর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালিয়েস বিয়ালিয়াৎস্কি এবং যুদ্ধরত দুই দেশ ইউক্রেন-রাশিয়া ভিত্তিক দুই মানবাধিকার সংগঠনের নাম ঘোষণা করা হয়। আগামী ডিসেম্বরে সুইডেনের স্টকহোমে নোবেল সপ্তাহে ছয় বিভাগে নোবেল বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পুরস্কারের পদক, সনদ ও অর্থ। সম্মানজনক এই পুরস্কারের অর্থমূল্য এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার (১১ লাখ মার্কিন ডলার)।
উল্লেখ্য, সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তার রেখে যাওয়া অর্থে ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে দেওয়া হয় বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার।