শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত মণিপুর, ভারতের বদলে উড়ল সেভেন সিস্টার্সের পতাকা
ভারতের সেভেন সিস্টার্সের ৬০ কিলোমিটার দখল করে নিয়েছে চীন—এমন গুঞ্জন চলছে কয়েকদিন ধরে। ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যম কিছু ছবি পর্যালোচনা করে এমন প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে। যদিও কোনো দেশই এ বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মুখ খোলেনি। এরইমধ্যে খবর এলো, দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্য ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সেখানের শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের দাবিতে নেমেছেন রাস্তায়। চালিয়েছেন সরকারি ভবনে হামলা। এমনকি, উড়িয়েছেন ‘সেভেন সিস্টার্সের পতাকা’।
দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল ও ইন্ডিয়া টুডে এনইয়ের প্রতিবেদন বলছে, গতকাল সোমবার দিনের শুরুতেই মণিপুরের রাজভবন ও থৈবালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলা চালান শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ডিসি অফিসে ভারতের পতাকা নামিয়ে সাতরঙা একটি পতাকা উড়ান, যে পতাকাকে ‘সেভেন সিস্টার্সের পতাকা’ বলে দাবি করা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এনইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল দিনের শুরুতেই রাজধানী ইম্ফালের সড়কে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের স্রোত বইতে দেখা যায়। তাদের দাবি, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন।
শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক অভিযোগের মধ্যে উঠে এসেছে বর্তমান নিরাপত্তা উপদেষ্টার কথা। তাদের দাবি, এই উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে। একইসঙ্গে কেন্দ্র থেকে রাজ্য নিয়ন্ত্রণে ‘ইউনিফাইড কমান্ডের’ স্থানান্তর হতে হবে।
বিক্ষুব্ধরা মনে করেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা অভিযানের দায়িত্ব নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে যুক্ত হলো—তাদের সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করে চলমান সংকটকে আরও ভালভাবে মোকাবিলা করতে পারবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীরা সেখানের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বাসভবনে বাইরে অবস্থান নিয়ে হামলার চেষ্টা করেন।
এর আগে সম্প্রতিনিউজফাই ও অরুনাচল২৪-এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) অরুণাচল প্রদেশের ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তত ৬০ কিলোমিটার ভিতরে প্রবেশ করেছে। তারা বলছে, শুধু প্রবেশই নয়, কিছু সময়ের জন্য আঞ্জাউ জেলার কাপাপু এলাকায় ক্যাম্পিং করেছে পিএলএ। যদিও চীন কিংবা ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য গণমাধ্যম দুটি জানায়নি। তবে, নিউজফাই তাদের সূত্রের দাবিতে বলছে, ওই স্থানে পাওয়া অগ্নিৎসব, স্প্রে-পেইন্ট করা পাথর এবং খাদ্য সামগ্রীর ছবি দেখে বোঝা যায়, এই অনুপ্রবেশ প্রায় এক সপ্তাহ আগে হয়েছিল।
ছবিতে দেখা যায়, পাথরের গায়ে ইংরেজিতে ২০২৪ সাল লেখা রয়েছে। ভারতীয় ভূখণ্ডে নিজেদের মালিকানা দাবি করার জন্য অনুপ্রবেশের সময় চীনা সেনাবাহিনী এসব কৌশল ব্যবহার করে বলে জানা গেছে।
নিউজফাই বলছে, দুই দেশকে বিভক্তকারী ম্যাকমোহন লাইনের হাদিগ্রা পাসের কাছের কাপাপুতে ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) একটি ক্যাম্পের অবস্থান রয়েছে। আর আনজাও জেলার নিকটতম প্রশাসনিক এলাকা চাগলাগাম ম্যাকমোহন লাইন থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়া চাগলাগাম থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে পার্বত্য এলাকায় গ্লাইতাকরু পাসের অবস্থান।