তুরস্কে বিক্ষোভে হাজারো মানুষের ঢল, গ্রেপ্তার ১৪১৮
তুরস্কে টানা সপ্তম রাতেও হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। বিক্ষোভের ঘটনায় শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
গত বুধবার (১৯ মার্চ) ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের পর থেকেই এই বিক্ষোভ শুরু হয়। তাকে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতিসংঘ এই গ্রেপ্তার ও পুলিশের বলপ্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে। ইমামোগলু দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) আঙ্কারায় এক ইফতার মাহফিলে তরুণদের উদ্দেশে এরদোয়ান বলেন, ‘এই সময়টি খুব সংবেদনশীল, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের কোনো জায়গা নেই।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইস্তানবুলের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাচকা পার্কে জড়ো হয়ে সিসলি অভিমুখে মিছিল করে। পুলিশের বাধার মুখেও তারা ‘সরকার, পদত্যাগ করো!’ স্লোগান দেয়।
ইস্তানবুল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার স্বার্থে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে এবং কিছু রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।
বিরোধী দল সিএইচপি (রিপাবলিকান পিপলস পার্টি) জানিয়েছে, মঙ্গলবারের সিটি হলের সামনে বিক্ষোভ ছিল শেষ রাতের ছোট সমাবেশ। তবে তারা শনিবার ইস্তানবুলে বড় ধরনের সমাবেশের পরিকল্পনা করছে।
সিএইচপির নেতা ওজগুর ওজেল বলেন, ‘আমাদের মেয়রদের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে, ইমামোগলুর প্রতি সমর্থন জানাতে, স্বচ্ছ বিচার ও আগাম নির্বাচনের দাবিতে আমরা শনিবার বিশাল সমাবেশ করব।’
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিক্ষোভকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪১৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার আরও সাতজন সাংবাদিক আদালতে হাজির হন, যাদের মধ্যে ছিলেন- এএফপি বার্তাসংস্থার ফটোগ্রাফার ইয়াসিন আকগুল।
এএফপির চেয়ারম্যান ফ্যাব্রিস ফ্রাইস এরদোয়ানের কাছে আকগুলের মুক্তির জন্য আবেদন করেছেন এবং তার গ্রেপ্তারকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইমামোগলুর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে পারবেন না। তবে গ্রেপ্তার হলেও তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ২২ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন এবং ২০২৮ সালে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে সংবিধান পরিবর্তন করে বা আগাম নির্বাচন ডেকে তিনি ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তুরস্কের বিচার মন্ত্রণালয় বলেছে, গ্রেপ্তার নিয়ে এরদোয়ানকে দায়ী করা অন্যায় এবং বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক