যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করছে না : জেডি ভ্যান্স

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, বরং তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে লড়ছে।
স্থানীয় সময় রোববার (২২ জুন) এনবিসির “মিট দ্য প্রেস উইথ ক্রিস্টেন ওয়েলকার” অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স বলেন, “আমরা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না। আমরা যুদ্ধ করছি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে।”
ভ্যান্স জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে চালানো হামলাগুলোর কারণে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অনেক বছর পিছিয়ে গেছে। “আমার বিশ্বাস, এখন ইরান একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হতে বহু বছর সময় লাগবে।”
ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি বিশাল "বাঙ্কার-বাস্টার" বোমার মাধ্যমে ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো “সম্পূর্ণ ধ্বংস” করে দিয়েছেন। ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই হামলার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে।
ভ্যান্স ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, তারা আলোচনায় সদিচ্ছার পরিচয় দেয়নি, যার ফলে মার্কিন হামলা অনিবার্য হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনায় অংশ নিচ্ছিল।
অন্যদিকে, ইরান আত্মরক্ষার অঙ্গীকার করেছে এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলায় তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
ভ্যান্স আরও বলেন, “আমরা ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন চাই না। আমরা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ চাই না। আমরা শুধু পারমাণবিক কর্মসূচির অবসান চাই, এরপর ইরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিয়ে কথা বলতে চাই।”
ভ্যান্স জানান, হামলার ঠিক আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন এবং হামলার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইরান থেকে কিছু “পরোক্ষ বার্তা” পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো সেনা মোতায়েন চাই না। মাটিতে যুদ্ধ নয়।”
ট্রাম্প গত শুক্রবার জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে জড়াবে কি না।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠেছে।
মার্কিন মিত্র ইসরায়েলই মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র দেশ, যার কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়। তারা দাবি করছে, ইরান যেন পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই তারা হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে, ইরান বলছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং তারা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি (এসপিটি)-এর সদস্য। উল্লেখযোগ্যভাবে, ইসরায়েল সেই চুক্তির অংশ নয়।

মার্কিন কংগ্রেসের অনেক ডেমোক্র্যাট সদস্য ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে সংবিধান পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে কেবল কংগ্রেসই যুদ্ধ ঘোষণা করার ক্ষমতা রাখে।
জবাবে ভ্যান্স বলেন, “গণবিধ্বংসী অস্ত্র ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্পষ্ট সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে।”