রাশিয়াকে থামানো না গেলে ইউক্রেনের বাইরেও আগ্রাসন চালাবে পুতিন : জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়াকে থামানো না গেলে ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বাইরেও আগ্রাসন চালাবে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়াকে প্রতিহত করতে না পারলে আরও অনেক দেশ আগ্রাসনের মুখে পড়বে। তিনি মিত্রদেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।
জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, আধুনিক সামরিক প্রযুক্তির বিকাশের ফলে একটি বৈশ্বিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, যেখানে “অস্ত্রই ঠিক করে দেবে কে বেঁচে থাকবে”। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারে বৈশ্বিক নিয়ম-কানুন তৈরির দাবি জানান এবং স্বয়ংক্রিয় ড্রোন ও চালকবিহীন যুদ্ধবিমানের ঝুঁকি প্রচলিত যুদ্ধের চেয়েও বেশি বলে উল্লেখ করেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, এখনই রাশিয়াকে থামানো সস্তা হবে, ভবিষ্যতে পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী সাধারণ ড্রোন তৈরির আশঙ্কায় পড়ে গেলে তার চেয়ে ব্যয়বহুল পরিস্থিতি তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপ মলদোভাকে রাশিয়ার প্রভাবের কাছে হারানোর সামর্থ্য রাখে না। তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমা দেশগুলো জর্জিয়া ও বেলারুশকে রাশিয়ার কবল থেকে রক্ষা করার সুযোগ হারিয়েছে।
সম্প্রতি মলদোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া শত শত কোটি ইউরো ঢালছে দেশটির ভেতরে সহিংসতা উসকে দেওয়ার ও ভীতি ছড়ানোর জন্য। রোববার দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে রাশিয়ার প্রভাবিত ভুয়া তথ্য প্রচারেরও প্রমাণ মিলেছে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ও ড্রোন ন্যাটো সদস্য এস্তোনিয়া, পোল্যান্ড ও রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় ওই দেশগুলো ন্যাটোর কাছে জরুরি পরামর্শ চেয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক বক্তব্যে জানিয়েছেন, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সহায়তায় তার সব ভূখণ্ড ফিরে পেতে পারে।
ট্রাম্প রাশিয়াকে “কাগুজে বাঘ” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তারা ইউক্রেনে উদ্দেশ্যহীন যুদ্ধ চালাচ্ছে। তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, রাশিয়া বাঘ নয়, বরং ভাল্লুকের মতো, আর “কাগুজে ভল্লুক” বলে কিছু নেই।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জেলেনস্কি জানান, তার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভালো বৈঠক হয়েছে এবং যুদ্ধ শেষ হলে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে প্রস্তুত।
এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যা সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ। বৈঠকে রুবিও যুদ্ধ বন্ধের এবং টেকসই সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে মস্কোকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।