১৯ দেশের অভিবাসন আবেদন স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ১৯টি অ-ইউরোপীয় দেশের অভিবাসীদের দাখিল করা সব অভিবাসন আবেদন স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর মধ্যে গ্রিন কার্ড ও মার্কিন নাগরিকত্বের প্রক্রিয়াকরণও অন্তর্ভুক্ত। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ট্রাম্প প্রশাসন এই স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেছে। এই স্থগিতাদেশটি সেই ১৯টি দেশের মানুষের জন্য প্রযোজ্য, যারা জুন মাসে আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।
এটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক মঞ্চের মূল বৈশিষ্ট্য অভিবাসনের ওপর আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের ইঙ্গিত দেয়।
এই ১৯টি দেশের তালিকায় রয়েছে আফগানিস্তান ও সোমালিয়া। এছাড়াও জুন মাসে কঠোর বিধিনিষেধের শিকার হওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে— মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, নিরক্ষীয় গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।
আংশিক নিষেধাজ্ঞার শিকার হওয়া অন্যান্য দেশগুলো হলো— বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা।
নতুন নীতির রূপরেখা দেওয়া সরকারি স্মারকলিপিতে গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে মার্কিন ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই হামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে একজন আফগান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যেখানে ন্যাশনাল গার্ডের একজন সদস্য নিহত ও আরেকজন গুরুতর আহত হন।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ট্রাম্প সোমালিদের বিরুদ্ধেও কঠোর মন্তব্য করে তাদের ‘আবর্জনা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন ‘আমরা তাদের আমাদের দেশে চাই না’।
নীতিমালায় কী আছে?
নতুন নীতিমালায় এই ১৯টি দেশের বিচারাধীন আবেদনপত্রগুলো স্থগিত করা হয়েছে। এই দেশগুলো থেকে আসা সব অভিবাসীকে ‘একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ পুনঃপর্যালোচনা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’ প্রয়োজনে তাদের সাক্ষাৎকার বা পুনরায় সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে, যাতে জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার হুমকি পুরোপুরি মূল্যায়ন করা যায়।
আমেরিকান ইমিগ্রেশন লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা শর্বরী দালাল-ধেইনি বলেছেন, তাদের সংস্থা নাগরিকত্বের শপথ অনুষ্ঠান বাতিল, সাক্ষাৎকার ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত দেশগুলোর ব্যক্তিদের জন্য স্ট্যাটাস সাক্ষাৎকারের সমন্বয় বাতিলের খবর পেয়েছে।
ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকেই আক্রমণাত্মকভাবে অভিবাসন নীতি প্রয়োগকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তার প্রশাসন প্রায়শই নির্বাসনের বিষয়টি তুলে ধরেছে, তবে এখন বৈধ অভিবাসন পুনর্গঠনের প্রচেষ্টার ওপর জোর দিচ্ছে।
এই বিধিনিষেধের ঝড় ইঙ্গিত দেয় যে, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা ও জো বাইডেনের নীতির জন্য তাকে দোষারোপ করার উদ্দেশ্যে বৈধ অভিবাসনের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক