বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের ডেপুটি গভর্নর ইয়াজিদ আল হামিদ। তিনি বলেন, বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) অথবা বিজনেস টু গভর্নমেন্ট (বিটুজি) মডেলে বাংলাদেশে সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড-পিআইএফ থেকে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
সৌদি আরব সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে গত ২০ সেপ্টেম্বর রিয়াদে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠককালে ইয়াজিদ আল হামিদ এ আশা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি ২০১৬ সাল থেকে পরিবর্তিত নতুন ব্যবস্থাপনা ও উদ্দেশ্য অর্জনে পিআইএফের পরিচালনা পদ্ধতি ও পরিকল্পনা বিষয়ে ধারণা দেন।
উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের মডেলগুলো বর্ণনা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্ব ও যুগোপযোগী চিন্তাধারায় বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ বিদেশি বিনিয়োগের একটি আদর্শ স্থান বলে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি বৈঠকে বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগাপ্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং সৌদি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।
কোনো প্রকল্পকে ব্যবসায়িকভাবে লাভজনক করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গৃহীত ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিংয়ের (ভিজিএফ) উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এটি একটি নতুন চিন্তাধারা যা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকে লাভজনক ও নিরাপদ করবে। তিনি ঢাকা-পায়রা বন্দর রেলপথ নির্মাণে সৌদি পিআইএফ থেকে অর্থায়নের অনুরোধ করলে ডেপুটি গভর্নর জানান, বাংলাদেশ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পেলে অবশ্যই বিবেচনা করা হবে।
উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান পিআইএফের ডেপুটি গভর্নরকে জানান, বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী কোনো সৌদি কোম্পানি অগ্রাধিকারমূলক সহায়তা চাইলে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড হলো সৌদি আরবের সার্বভৌম সম্পদ তহবিল, যার আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪৫০ বিলিয়ন ডলার যা ২০২৫ সাল নাগাদ এক ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। এ তহবিল থেকে স্থানীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। পিআইএফ সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে থাকে। এ তহবিল থেকে সেবা খাত, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিমান ও প্রতিরক্ষা, যানবাহন, পরিবহণ, খনিজ ও খনি, আর্থিক সেবা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, মিডিয়া এবং প্রযুক্তি, খাদ্য ও কৃষি এবং অন্যান্যসহ ১৩টি কৌশলগত খাতে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে।
সভায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশিদারীত্ব কর্তৃপক্ষের (পিপিপিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা আফরোজ ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।