প্রেমিকাকে হত্যা করা যুবককে ক্ষমা করলেন পুতিন
সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল প্রেমিকা। এর জেরে প্রেমিক প্রেমিকাকে আটকে রাখে সাড়ে তিন ঘণ্টা। এ সময়ে তাকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয়। অবশেষে ওই মেয়েকে ১১১ বার ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে প্রেমিক। সেই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন প্রেমিক। ১৭ বছরের সাজাও হয় তার। তবে, এই খুনিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। এর মূলে রয়েছে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার বিষয়। ঘটনাটি রাশিয়ার। খবর এনডিটিভির।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য সানের বরাতে আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় সাজাপ্রাপ্ত একজন খুনিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভ্লাদিস্লাভ কানিউস নামে ওই রুশ নাগরিক তার প্রাক্তন প্রেমিকা ভেরা পেখতেলেভাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার জন্য ১৭ বছরের সাজা পান। তবে, এক বছরেরও কম সময়ের জন্য তিনি সাজা খেটেছেন।
দ্য সানের তথ্যমতে, কানিউস তার সাবেক প্রেমিকাকে ১১১ বার ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এর আগে তাকে সাড়ে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন চালায়। ওই নারীর চিৎকারে বিষয়টি জেনে প্রতিবেশিরা সাত বার পুলিশে ফোন দেয়। তবে, পুলিশের পক্ষ থেকে ফোন ওঠানো হয়নি।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি সামনে আনেন পেখতেলেভার মা ওকসানা। একটি ছবিতে মেয়ের হত্যাকারীকে সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় অস্ত্র হাতে দেখতে পান তিনি। শোকার্ত ওই মা বিলাপ করে বলেন, ‘এটা আমার ওপর একটা আঘাত। আমার সন্তান কবরে পঁচে যাচ্ছে। আমার জীবনে আর কোনো আশা নেই।’
কাঁদতে কাঁদতে এই মা বলেন, ‘আমার বেঁচে থাকার আর কোনো ইচ্ছে নেই। তারা আমাকে শেষ করে দিয়েছে। বাস্তবিক অর্থে আমি অনেক শক্তিশালী ছিলাম। তবে, আমাদের রাষ্ট্রের এই অনাচার আমাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। আমি জানি না এরপর কি করতে হবে।’
এ বিষয়ে গত বুধবার নারী অধিকারকর্মী আলিওনা পোপোভা বলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষ সাজাপ্রাপ্ত কানিউসের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তাকে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী শহর রোস্তভে পাঠানো হয়েছে। ৩ নভেম্বর আমাকে প্রসিকিউটর কার্যালয় থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। যেখানে লেখা থাকে, ২৭ এপ্রিল প্রেসিডেন্টের ডিক্রির মাধ্যমে কানিউসকে ক্ষমা করা হয়েছে।’
মেয়ের হত্যাকারীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য পুতিনকেই দুষছেন ওকসানা নামের ওই মা। নিজের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত তিনি। ওকসানা বলেন, ‘কীভাবে একজন খুনির হাতে অস্ত্র দেওয়া হলো। কীভাবে একজন খুনি রাশিয়াকে রক্ষা করবে। সে নোংরা। সে মানুষ নয়। সে যেকোনো সময় যে কাউকে হত্যা করতে পারে।’