শেখ হাসিনার মন্তব্য পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে : শশী থারুর
শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য নিয়ে ভারতীয় কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেছেন, ‘তার এসব বক্তব্য পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।’ গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাবে (এফসিসি) একটি বই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর দ্যা প্রিন্ট।
শশী থারুর জোর দিয়ে বলেন, যেই সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন ভারতকে সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
থারুর আরও বলেন, ‘আপনি কোনো দেশের সরকার নির্ধারণ করতে পারেন না। আপনাকে তাদের সঙ্গে কাজ করতে শিখতে হবে।’
কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শত্রুতাপূর্ণ বলা যাবে না, তবে কিছুটা সতর্কতা প্রয়োজন।’
বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির দুটি প্রধান নীতির কথা উল্লেখ করে শশী থারুর বলেন, ‘প্রথমত, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। দ্বিতীয়ত, আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা, কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সম্প্রদায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়া নয়।’
থারুর আরও বলেন, ‘একজন বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের প্রতিটি স্তরে এই বার্তা দেওয়া উচিত, আমাদের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের প্রতি।’
ভারতকে বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর ‘গভীর ও সতর্ক নজর’ রাখতে হবে উল্লেখ করে কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ হতে পারে ভারতের ‘দুর্বল জায়গা’, যেখানে শত্রুতাপূর্ণ সরকার ক্ষমতায় এলে ভারত কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে।
থারুর আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরি। কারণ, তারা আমাদের একেবারে পাশের দেশ। সেখানে যা ঘটছে, তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব আমাদের ওপর পড়তে পারে।’
ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শশী থারুর বলেন, ‘যদি বাংলাদেশে বড় ধরনের কোনো অস্থিরতা দেখা দেয়, তাহলে তা ভারতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কারণ, এটি এমন একটি এলাকা যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, যেখানে আমাদের ক্ষতি করার জন্য বহিরাগত শক্তির সুযোগ রয়েছে।’
থারুর বলেন, হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে, এ নিয়ে কোনো সংশয়ের জায়গা নেই।
বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। দেশটি গত বছর ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের সাক্ষী হয়েছে, যার ফলে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। গত ৫ আগস্ট তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং এখনও সেখানে অবস্থান করছেন।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক