যুক্তরাষ্ট্রে চীনা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা চীনা শিক্ষার্থীরা ভালোই থাকবে। শুক্রবার (৩০ মে) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। খবর এএফপির।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা (চীনা শিক্ষার্থীরা) ঠিকই থাকবে। সবকিছু ঠিকঠাকভাবে মিলে যাবে। আমরা শুধু চেক করে নিতে চাই, আমাদের কলেজগুলোতে কোন শিক্ষার্থীরা আছে। এটা সব কলেজের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’ 

ভিসা নজরদারি ও আদালতের রায়

ট্রাম্প প্রশাসন চলতি সপ্তাহে চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসার ওপর বিশেষ নজরদারি চালানোর ঘোষণা দেয়। এ সিদ্ধান্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চলমান সরকারের চাপেরই অংশ। তবে বৃহস্পতিবার আদালত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি ঠেকাতে তার প্রশাসনের উদ্যোগের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর একদিন পরেই ট্রাম্পের এই অপেক্ষাকৃত ‘নরম’ মন্তব্য এলো।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বুধবার (২৮ মে) বলেছিলেন, চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা ‘জোরালোভাবে বাতিল’ করা হবে। এরই মধ্যে হাজারো শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে—যার মধ্যে কেউ কেউ ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিলেন, আবার কেউ ছোটখাটো ট্র্যাফিক অপরাধেও অভিযুক্ত।

হার্ভার্ডের সঙ্গে টানাপড়েন

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টানাপোড়েন বহুদিনের। সরকার হার্ভার্ডকে কিছু নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীর তালিকা দিতে বলেছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে।

শুক্রবার (৩০ মে) ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না হার্ভার্ড আমাদের তালিকা দিচ্ছে না কেন। কিছু একটা হচ্ছে। তারা তালিকা দিচ্ছে না, কারণ সম্ভবত তাতে এমন কিছু নাম আছে, যেগুলো যথেষ্ট খারাপ। তারা তালিকাটা দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।’

এ সপ্তাহেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বক্তব্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানালে তাকে এক মিনিট দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান উপস্থিত সবাই।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এমন মানুষ চাই যারা আমাদের দেশকে ভালোবাসবে, দেশের সেবা করবে, দেশকে মর্যাদা দেবে।’

যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা গড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মোট জনসংখ্যার ছয় শতাংশেরও কম, যা যুক্তরাজ্যের চেয়ে অনেক কম। যুক্তরাজ্যে এই হার প্রায় ২৫ শতাংশ।