রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনের জয় অসম্ভব : সাবেক ব্রিটিশ সেনাপ্রধান

রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনের পক্ষে জয়লাভ করা সম্ভব নয়। ফলে কিয়েভের উচিত ক্রেমলিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করা— এমনটাই মত দিয়েছেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফিল্ড মার্শাল লর্ড রিচার্ডস।
আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়া লর্ড রিচার্ডস সম্প্রতি ব্রিটেনের সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ ‘ফাইভ-স্টার’ পদমর্যাদায় উন্নীত হয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ন্যাটো বাহিনীর সহায়তা ছাড়া ভ্লাদিমির পুতিনের সেনাদের ইউক্রেন থেকে বিতাড়িত করা সম্ভব নয়।
সম্প্রতি দ্য ইনডিপেনডেন্টের পডকাস্ট ওয়ার্ল্ড অফ ট্রাবলে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক এই চিফ অফ দ্য ডিফেন্স স্টাফ (সেনাপ্রধান)। গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়।
লর্ড রিচার্ডস বলেছেন, ইউক্রেনের মিত্ররা প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ইউক্রেনের ক্ষেত্রে আমরা যা করেছি, তা হলো ইউক্রেনকে লড়তে উৎসাহিত করা, কিন্তু জয়লাভের উপায় তাদের দেওয়া হয়নি।
ইউক্রেনের সাফল্যের সম্ভাবনা নিয়ে রিচার্ডস বলেন, আমার মতে তারা (ইউক্রেন) জিতবে না। রিসোর্স বাড়ালেও কি জয় সম্ভব নয়—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, তাদের জনবল নেই।’
ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক
ফিল্ড মার্শালের এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পেতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাজি করাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে উড়ে যান। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধ এখন প্রধানত ড্রোনের মাধ্যমে চলছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জেলেনস্কির প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব দেখালেও মার্কিন অস্ত্র দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। দেশের অস্ত্র মজুত বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি। জেলেনস্কি খুব সামান্যই কথা বলেন, শুধু সৌজন্যমূলকভাবে ড্রোন প্রযুক্তির বিনিময়ের প্রস্তাব দেন, যা ট্রাম্প বিবেচনা করবেন বলে জানান।
শীর্ষ সম্মেলন শেষে জেলেনস্কি বলেন, ট্রাম্প টমাহক দেওয়ার বিষয়ে ‘না’ বলেননি, তবে ‘হ্যাঁ’-ও বলেননি।

ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ
১৯৪৫ সালের পর বিভিন্ন যুদ্ধে ন্যাটোর পক্ষে মার্কিন সৈন্যদের নেতৃত্ব দেওয়া একমাত্র ব্রিটিশ কর্মকর্তা লর্ড রিচার্ডস তার পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে বলেন, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ খুব ভালো নয়। যদি না আমরা তাদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে যাই—যা আমরা করব না। কারণ ইউক্রেন আমাদের জন্য কোনো অস্তিত্বের প্রশ্ন নয়। তবে এটি স্পষ্টতই রাশিয়ানদের জন্য অস্তিত্বের প্রশ্ন।
রিচার্ডস জোর দিয়ে বলেন, আমাদের জাতীয় স্বার্থের জন্য এটি অতিজরুরি নয় বলে আমরা যুদ্ধে যাব না। আমি মনে করি ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে ভালো ফল হতে পারে একটি ‘স্কোর ড্র’ করা।