পশ্চিম তীর ছাড়তে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি চাপ
আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য করছে ইসরায়েল। গত সপ্তাহে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেবল চলতি বছরেই জেনিন, নূর শামস ও তুলকারেম শরণার্থী শিবিরের ৩২ হাজার ফিলিস্তিনিকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীরে এত বড় আকারের গণ-উচ্ছেদ আর ঘটেনি। খবর আলজাজিরার।
এই উচ্ছেদ এমন সময়ে ঘটছে যখন পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সহিংসতা বেড়ে চলেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলিদের হাতে নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনিদের ওপর আরও সহিংস হামলা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন : ইসরায়েলি হামলা-বিধিনিষেধে রেকর্ড পতনে ফিলিস্তিনের অর্থনীতি
জাতিসংঘ জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের ‘এলাকা সি’-তে বাড়ির অনুমতির না থাকার অজুহাতে বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ায় এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যদিও ফিলিস্তিনিদের জন্য এসব এলাকায় নির্মাণ অনুমতি পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র দাবি করেছেন, এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে ‘অপারেশনাল প্রয়োজনীয়তার’ কারণে, যা শিবিরের অভ্যন্তর থেকে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ উপশমের জন্য ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ নামে পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন : গাজায় আসলে কোনো যুদ্ধবিরতি নেই
ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচসহ একাধিক শীর্ষ সরকারি ব্যক্তি প্রকাশ্যেই পশ্চিম তীরকে সংযুক্ত করে ইসরায়েলের অংশ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এইচআরডব্লিউসহ মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইসরায়েলের অপরাধের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
ইসরায়েলি মানবাধিকার গোষ্ঠী বি’সেলেমের নির্বাহী পরিচালক ইয়ুলি নোভাক পশ্চিম তীরের পরিস্থিতিকে ‘জাতিগত নির্মূলকরণ’ এর চলমান নীতি হিসেবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের জীবন সম্পূর্ণভাবে পরিত্যক্ত এবং গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যে চরম সহিংসতা দেখা যাচ্ছে, পশ্চিম তীরেও সেই পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক