‘মোদি আর আগের মতো নেই, আত্মবিশ্বাস তলানিতে’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর আগের মতো নেই, তার আত্মবিশ্বাস কমছে এবং তার নীতিগুলো দেশকে দুর্বল করছে—এমনই মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) লোকসভায় ‘বন্দে মাতরম’-এর ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
লোকসভার ওয়েনাড় কেন্দ্রের এই সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন সামনে থাকায় সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে বিতর্ক উত্থাপন করেছে, যাতে সাধারণ মানুষের প্রকৃত সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়া যায়। খবর ইকোনমিক টাইমসের।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বিজেপির সমালোচনা করে বলেন, স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে আক্রমণ করতেই সরকার এই বিতর্ক সামনে এনেছে এবং যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ তোলাই এর উদ্দেশ্য।
প্রিয়াঙ্কা বলেন, আপনারা যেহেতু বারবার নেহরুর কথা বলেন, তাহলে আসুন একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ তালিকাভুক্ত করি, তা নিয়ে বিতর্ক করি এবং একবারে বিষয়টির ইতি টানি।
এরপর বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু—মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব নিয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানান তিনি।
‘বন্দে মাতরম’ প্রসঙ্গে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, এই গান দেশের আত্মার অংশ। বন্দে মাতরম বললে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস মনে পড়ে। এই গান মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। তাহলে এই বিতর্কের প্রয়োজন কী?
তিনি প্রশ্ন তোলেন, আমাদের লক্ষ্য কী, জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্ব কী, আমরা তা কীভাবে পালন করছি—এগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। জাতীয় সংগীত নিয়ে আবার কী ধরনের বিতর্ক হতে পারে?
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন সামনে আসায় প্রধানমন্ত্রী সেখানে রাজনৈতিক ভূমিকা রাখতে চান বলেই এই আলোচনা।
প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, এই সরকার অতীত নিয়ে পড়ে থাকতে চায়, কারণ তারা বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চায় না।
লোকসভায় বক্তব্যে তিনি আবারও বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি আগের মতো নেই। তার আত্মবিশ্বাস কমছে এবং তার নীতিগুলো দেশকে দুর্বল করছে। সরকারের আমার বন্ধুরা নীরব, কারণ অন্তর থেকে তারাও বিষয়টি জানে।
‘বন্দে মাতরম’-এর ইতিহাস তুলে ধরে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৫ সালে গানটির প্রথম দুটি স্তবক রচনা করেন এবং ১৮৮২ সালে আরও চারটি স্তবক যোগ করে ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে প্রকাশ করেন। ১৮৯৬ সালে কংগ্রেস অধিবেশনে প্রথমবারের মতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গানটি পরিবেশন করেন।
জওহরলাল নেহরু ও সুভাষচন্দ্র বসুর মধ্যে থাকা চিঠিপত্রের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, বন্দে মাতরম নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতি করার যে অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী তুলেছেন, তা ভিত্তিহীন।
প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, বন্দে মাতরমের প্রথম দুটি স্তবককে জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে সংবিধান সভা ও তার সদস্যদের সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক