মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত ১১ নাগরিক
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশে জান্তা সরকারের বিমান হামলায় ১১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ১১ জন। দেশটির সামরিক জান্তাবিরোধী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সশস্ত্র একটি সংগঠনের মুখপাত্র আজ শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য দিয়েছে। খবর এএফপির।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা জান্তা সরকার বর্তমানে ব্যাপকভাবে সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। দেশটির সৈন্যদের বিরুদ্ধে বেসামরিক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক তৎপরতা হিসেবে আকাশপথে হামলাসহ কামানের গোলা ব্যবহারেরও অভিযোগ ওঠেছে।
এ বিষয়ে লোয়ে ইয়া ও নামে তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) একজন সদস্য বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১টায় নামখাম অঞ্চলের দুটি এলাকায় বোমাবর্ষণ করে সরকারি বাহিনী।’ তিনি জানান, এই হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ১১ জন। তিনি আরও জানান, হামলায় স্থানীয় একটি রাজনৈতিক দলের অফিস ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। মৃতদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, চারজন নারী ও দুই শিশু রয়েছে।
গত বছর কয়েক সপ্তাহের ব্যাপক সংঘর্ষের পর টিএনএলএ সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে নামখাম অঞ্চলটি দখল করে নেয়। এই অঞ্চলটি চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। হামলার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় লোকজন ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খুঁজে বেড়াচ্ছে। একটি ভিডিওতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি ভবনও দেখা যায়।
টিএনএলএ স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও বিমান হামলার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে লোকজন ইচ্ছা করলে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে তাদের বাধা দেওয়া হবে না। তবে হামলার বিষয়ে জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কথা বলতে রাজী হননি।
গত বছর থেকে শান প্রদেশের নৃগোষ্ঠীগুলোর বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ সরকারি বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক মাত্রায় সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এসব সংঘর্ষে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারায়। সশস্ত্র গ্রুপগুলো প্রদেশের আঞ্চলিক সামরিক কমান্ডপোস্ট দখল করে নেয়। এছাড়া চীনের সঙ্গে সীমান্ত এলাকার ক্রসিংটিরও নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।
এ সপ্তাহের শুরুতে জান্তা সরকার প্রধান মিন অং হ্লাইং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, সশস্ত্র গ্রুপগুলোর কাছ থেকে ভূখন্ড পুনরুদ্ধারে পাল্টা হামলা চালাবে সেনাবাহিনী। এছাড়া টিএনএলএ সশস্ত্র গ্রুপটিকে সরকার ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভূক্তি করে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সামরিক অভ্যুত্থানে পর থেকে সংঘাতের কারণে মিয়ানমারের ২৭ লাখ নাগরিক তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন।