৪ নারী সেনার বিনিময়ে মুক্তি পেলেন ২০০ ফিলিস্তিনি
গাজা থেকে চারজন ইসরায়েলি নারী সেনাকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় শনিবার (২৫ জানুয়ারি) গাজার প্যালেস্টাইন স্কয়ারে তাদের রেডক্রস কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। খবর এএফপি। এই চার নারী সেনার মুক্তির বিনিময়ে ২০০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে চার ইসরায়েলি সেনাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে ১২০ জন ইসরায়েলের কারাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন।
এর আগে এএফপি জানায়, গতকাল শুক্রবার ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, তারা মুক্তি পেতে যাওয়া পণবন্দিদের নামের তালিকা হামাসের কাছ থেকে পেয়েছে।
ইসরায়েলি পণবন্দি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে গঠন করা ফোরামের সূত্র দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, যে চার ইসরায়েলি নারী মুক্তি পেয়েছেন, তারা হলেন–কারিনা আরিয়েভ, ড্যানিয়েলা জিবোয়া, নামা লেভি ও লিরি আলবাগ। এদের মধ্যে বন্দি থাকা অবস্থায় আলবাগ ১৯ বছরে পা রাখেন আর বাকি সবার বয়স ২০ বছরের কোঠায়।
গত রোববার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এক ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় এই বন্দি বিনিময়ের ঘটনা ঘটছে। আর এর অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে এই সংঘাত থেকে বের হতে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেককে সামনে রেখে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকেই এই চুক্তির ঘোষণা দিয়ে আসছিল এবং এরপর থেকে বিষয়টির নিয়ে নিজের কৃতিত্বের দাবি করছেন ট্রাম্প।
এদিকে, হামাসের সশস্ত্র উইং ইজেদিন আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবেইদা গতকাল শুক্রবার এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলেন, বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় কাসেম ব্রিগেড সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলের চার নারী সৈন্যকে মুক্তি দেওয়া হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে নামগুলো পেয়েছেন।
ইসরায়েলের কারাগার বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মুক্ত হয়ে গাজায় ফিরবেন আর বাকিরা যাবেন অধিকৃত পশ্চিম তীরে।
জানা গেছে, তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপটি হতে যাচ্ছে ৪২ দিনের, যা গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে। এ সময় ৩৩ জন ইসরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং এর বিনিময়ে মুক্ত হবে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা এক হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দি। এর আগে এমিলি দামারি, রোমি গোমেন ও ডরোন স্টেইনবেচার নামের তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
দ্বিতীয় ধাপে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে বা যুদ্ধের ইতি টানতে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে চেষ্টা চালানোর কথা বলা হয়েছে। আর তৃতীয় ধাপে বলা হয়েছে, গাজার পুনর্গঠন কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টিকে। এ ছাড়া এ সময় মৃত পণবন্দিদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক