গাজা থেকে সোমবার মুক্তি পাচ্ছে ইসরায়েলি জিম্মিরা : ট্রাম্প

গাজায় হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে আটক থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের সোমবার (১৩ অক্টোবর) মুক্তি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে জীবিত ও মৃত—মোট ৪৮ জন বন্দিকে হস্তান্তর করা হবে। খবর আল জাজিরার।
হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ অক্টােবর) রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “সোমবারটি হবে একটি বড় দিন। হামাস ২০ জন জীবিত জিম্মি এবং ২৮ জন মৃত জিম্মির দেহ ইসরায়েলকে ফিরিয়ে দেবে, বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।”
ট্রাম্প আরও জানান, “যাদের দেহ ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তাদের অনেকের মরদেহ এখন খোঁড়াখুঁড়ি করে বের করা হচ্ছে। এটা এক গভীর ট্র্যাজেডি।”
গাজায় এখনো জীবিত জিম্মিদের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, “তারা এমন কিছু ভয়াবহ স্থানে রয়েছে, যেগুলোর অবস্থান খুব অল্প কয়েকজনই জানে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, তিনি এই সপ্তাহান্তে মিশরের রাজধানী কায়রো সফরে যাচ্ছেন, এরপর ইসরায়েলের পার্লামেন্ট ‘কনেসেট’-এ ভাষণ দেবেন, তারপর দেশে ফিরে যাবেন।
চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাসকে সব জিম্মি মুক্তি দিতে হবে।
ইসরায়েলি সরকার শুক্রবার ভোরে যুদ্ধবিরতি অনুমোদন করে, যা দিনটির পরবর্তী সময়ে কার্যকর হয়। এরপর ইসরায়েলি সেনারা ধীরে ধীরে গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে সরে গিয়ে নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নেয় এবং বন্দি মুক্তির ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা শুরু হয়।
এই সপ্তাহের শুরুতে কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল যে, হামাস সব মৃত জিম্মির দেহাবশেষ খুঁজে বের করতে সমস্যায় পড়তে পারে, যা সোমবারের নির্ধারিত বিনিময় প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলতে পারে।
এরই মধ্যে, শুক্রবার ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজার ধ্বংসস্তূপে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে শুরু করেছেন। তবে গাজার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে — বিশেষ করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে।

ট্রাম্প আশাবাদী সুরে বলেন, “হামাস এবং ইসরায়েল — উভয়ই এখন যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত। বেশিরভাগ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, কিছু বিস্তারিত পরবর্তীতে ঠিক হয়ে যাবে।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “মিশরে একটি সুন্দর ঘরে বসে আলোচনা করা সহজ, কিন্তু বাস্তবে সেটি বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন। তবু আমি বিশ্বাস করি, এইবার ঐক্যমত স্থায়ী হবে।”
ট্রাম্প দাবি করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইরান ও রাশিয়া তার গাজা শান্তিচুক্তিকে সমর্থন জানিয়েছে। তিনি বলেন, “এটি শুধু গাজার নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি চুক্তি। এটা এক সুন্দর বিষয় — মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির সূচনা।”