ভারতে মন্দিরে পদদলিত হয়ে ৭ জন নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের হরিদ্বার শহরের মানসা দেবী মন্দিরে পদদলিত হয়ে অন্তত ৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক ভক্ত। মন্দিরের সিঁড়ি সংলগ্ন রাস্তায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে হঠাৎ আতঙ্কে লোকজন ছুটোছুটি শুরু করে, যার ফলেই এই পদদলনের ঘটনা ঘটে।
গড়ওয়াল বিভাগের কমিশনার বিনয় শঙ্কর পাণ্ডে জানান, মন্দিরে প্রচুর ভক্তসমাগমের মধ্যেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, আহত ভক্তদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে এবং অনেকে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত ৫৫ জন আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, উত্তরাখণ্ড পুলিশের স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স এবং স্থানীয় পুলিশ উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
হরিদ্বারের পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট প্রমেন্দ্র সিং ডোবাল প্রথমে ৬ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করে বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। আহতদের মধ্যে ৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার গুজব থেকেই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয় এবং হুড়োহুড়ি শুরু হয়।”
এই ঘটনা ঘটেছে হিন্দুদের পবিত্র মাস শ্রাবণে (সাওন), যখন হরিদ্বারে বিপুল সংখ্যক শিবভক্ত ও কাওয়ারিয়া জড়ো হন গঙ্গাজল সংগ্রহের জন্য।
বিহার থেকে আসা একজন আহত ভক্ত এএনআইকে বলেন, “হঠাৎ করেই ব্যাপক ভিড় জমে যায় এবং লোকজন দিকবিদিক ছুটোছুটি শুরু করে। আমি পড়ে যাই এবং আমার হাত ভেঙে যায়।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোকপ্রকাশ করে বলেন, “উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে মানসা দেবী মন্দিরের পথে পদদলনের ঘটনায় জীবনহানির সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে।”

মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এক্সে লেখেন, “মানসা দেবী মন্দিরের পথে পদদলনের দুঃসংবাদের খবরে আমি অত্যন্ত ব্যথিত। স্থানীয় পুলিশ এবং অন্যান্য উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে। আমি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সকল ভক্তের মঙ্গল ও নিরাপত্তার জন্য মা মানসা দেবীর কাছে প্রার্থনা করছি।”
এই মর্মান্তিক ঘটনায় হরিদ্বারজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন করা হবে।